Header Ads

পাইকগাছায় মাংস বিক্রয় নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে মিথ্যাচার


 পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : পাইকগাছার চাঁদখালীতে মাংস বিক্রয়কে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনায় নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাদা ইলিয়াসকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। থানা পুলিশও তথ্য অনুসন্ধান করে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয়টির সত্যতা পাননি। সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তার নিকট আত্মীয়দ্বারা এ ধরণের মিথ্যাচার করছে বলে বৃহস্পতিবার সরেজমিন গেলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ চাঁদখালী বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা এ ধরণের অভিযোগ করেন। যদিও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করায় এর প্রতিবাদ জানান এলাকাবাসী।

জানাগেছে, গত ৩ অক্টোবর রোববার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চাঁদখালীর সাপ্তাহিক হাট ছিল। হাটের দিনে এলাকার আমির, মিজানুর, নুন্টু, সাইদুর ও রফিকুল যৌথভাবে মাংস বিক্রয়ের ব্যবসা করে থাকে। এখানে মাংস বিক্রয় কর্মচারী হিসেবে কাজ করে থাকেন মিজানুর ওরফে রেজন নামের এক ব্যক্তি। ঘটনার দিন সকালে জিয়ারুল ইসলাম চাকা নামের এক ব্যক্তি মাংস কিনতে গেলে চর্বির পরিমাণ বেশি দেওয়ায় মিজানুরের সাথে জিয়ারুলের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে মিজানুর দম্পত্তি চাঁদখালী ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাদা ইলিয়াসকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান সহ এলাকাবাসী। শাহাজাদা ইলিয়াসের হুকুমে জিয়ারুল মিজানুর দম্পত্তিকে মারপিট করে এবং এতে মিজানুরের স্ত্রী ময়না মৃত সন্তান প্রসাব করে এমন তথ্য বিভিন্ন মাধ্যমে এলাকায় ছড়ানো হচ্ছে এবং এতে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করা হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন গেলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন। চাঁদখালী বাজারের শফিক ফার্মেসীর সত্ত¡াধিকারী ও সাবেক ইউপি সদস্য শিক্ষক আব্দুল মান্নান সরদার জানান, ঘটনার দিন সকাল পৌনে ১০টার দিকে আমি আমার দোকানে বসে ছিলাম। হঠাৎ দেখি দোকানের সামনে মিজানুরের স্ত্রী ময়না জুতা দিয়ে চাকাকে মারপিট করছে। এ সময় ইউপি সদস্য আনিছুর ও টিক্কা নামের এক ব্যক্তি তাদেরকে ঠেকানোর চেষ্টা করে। এর আগে সকালে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহাজাদা ইলিয়াস ইউপি সদস্যদের নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও ও ওসির সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করতে উপজেলা সদরে যায়। ৯নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান জানান, উপজেলা সদরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমি তখন চাঁদখালী বাজারের বিএনপি’র অফিসের সামনে মটর সাইকেল রেখে দাড়িয়েছি। তখন দেখি ময়না আর জিয়ারুল উত্তেজিত হয়ে তর্ক করছে। তখন আমি এগিয়ে গিয়ে তাদেরকে থামিয়ে দিয়ে উপজেলা সদরের উদ্দেশ্যে চলে যায়। ৬নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য কাইয়ুম হোসেন জানান, নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব মুনছুর আলী গাজী ভিন্ন দল থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করে দলের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। তিনি মিথ্যা মামলা সহ নানাভাবে এলাকার মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছেন। সর্বশেষ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে নির্বাচন পরবর্তী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। যার অংশ হিসেবে তার নিকট আত্মীয় মিজানুর ও ময়নাকে দিয়ে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহাজাদা ইলিয়াসকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করছে। যে মিথ্যাচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ একটি সাজানো নাটক এবং এ ঘটনা সত্য কিংবা এ ঘটনার সাথে শাহাজাদা ইলিয়াসের কোন সংশ্লিষ্টতা থাকলে ইউপি সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করারও কথা বলেন কাইয়ুম হোসেন। বিসমিল্লাহ ক্লিনিকের সত্ত¡াধিকারী ডাঃ মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি আমার ক্লিনিকের সামনেই ঘটেছিল। এখানে একজন নারী জিয়ারুলকে জুতা দিয়ে মারতেছিল। তবে এ সময় শাহাজাদা ইলিয়াস এর আশে পাশে কোথাও ছিল না এবং এ সময় ওই নারীকে কেউ মেরেছে এমন ঘটনাও ঘটেনি। পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মুনছুর আলী গাজী নির্বাচনে চরম পরাজয় মেনে নিতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এর আগেও তার ইন্দনে বর্তমান চেয়ারম্যান বয়স বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা জোয়াদুর রসুলের বিরুদ্ধেও ধর্ষণ মামলা করে হয়রানী করা হয়েছিল। আনোয়ারা বেগম জানান, আলহাজ্ব মুনছুর আলী গাজীর কারণে দল এবং এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এর থেকে এলাকার মানুষ মুক্তি চাই। নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহাজাদা ইলিয়াস জানান, রোববার সকাল থেকে আমি ইউপি সদস্যদের নিয়ে উপজেলা সদরে ছিলাম। সারাদিন উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও মহোদয় ও ওসি সাহেবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছিলাম। ওই সময় আমি এলাকায় ছিলাম না এবং যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকে জড়িয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে এ সম্পর্কেও আমার কোন কিছু জানানেই। মূলত পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মুনছুর আলী গাজী নির্বাচনের শুরু থেকেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। তার লোকজন নির্বাচনের আগে আমার নির্বাচনী অফিসে হামলা, ভাংচুর, আমার কর্মী সমর্থকদের মারপিট করে এবং মিথ্যা মামলা দেয়। সে সব সময় আমাকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিয়ে আসছে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তার নিকট আত্মীয়কে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে বলে অভিযোগ করেন শাহাজাদা ইলিয়াস। সরেজমিন গিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করেছে থানা পুলিশ। থানা পুলিশের এসআই ইমরান জানান, এ ধরণের অভিযোগ পেয়ে ওসি স্যারের নির্দেশে আমি সরে জমিন গিয়ে মিজানুর, ময়না বেগম ও তার মায়ের সাথে কথা বলেছি। তারা মারপিট করার কথা বললেও নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহাজাদা ইলিয়াসের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এর কোন প্রমাণ দিতে পারেনি। এছাড়া বাজারের অনেকের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু এ ধরণের অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। চক্রান্তের অভিযোগ অস্বীকার করে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব মুনছুর আলী গাজী জানান, নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকতেই পারে। এনিয়ে ষড়যন্ত্র কিংবা চক্রান্ত করার কিছু নাই। 


কোন মন্তব্য নেই

Maliketh থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.