Header Ads

পাইকগাছায় দ্বীধাবিভক্ত যুবলীগনেতৃবৃন্দ; উপজেলা কমিটি স্থগিত করার প্রতিবাদে একাংশের সংবাদ সম্মেলন; হামলা ও মারপিট আহত- ২

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ।। পাইকগাছায় দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে যুবলীগ নেতৃবৃন্দ। জেলা যুবলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপজেলা যুবলীগের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছেন উলে­খ করে এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এসএম শামছুর রহমান। এদিকে সংবাদ সম্মেলনে আসার পথে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগ নেতাদের উপর বাবু গাইন ও তার লোকজন হামলা করেছেন বলে দাবী করেছেন উপজেলা যুবলীগের সমন্বয়ক শেখ আনিছুর রহমান মুক্ত। হামলা ও মারপিটের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থল সহ পৌর বাজারে পুলিশ মোতায়ন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। অপরদিকে জেলা যুবলীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সংগঠনের জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন।
    জানাগেছে, গত ২৬ জুলাই উপজেলা যুবলীগের এক সভায় পৌরসভা ও হরিঢালী সহ দুটি ইউনিয়নের কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। প্রথম শ্রেণি পৌরসভার কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে এদিন জেলা যুবলীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় উপজেলা যুবলীগের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে জেলা যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শেখ আনিছুর রহমান মুক্তকে উপজেলা যুবলীগের সমন্বয়ক করা হয়। এর প্রতিবাদে শনিবার সকালে পৌর সদরের আল-মদিনা মার্কেট চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলা যুবলীগের একাংশের নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এসএম শামছুর রহমান বলেন, জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দু’জনই জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে রয়েছেন। সে মোতাবেক গঠনতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী তারা দু’জনই সভাপতি-সম্পাদকের পদ হারিয়েছেন। তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপজেলা যুবলীগের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছেন। তাদের নির্দেশনা আমরা মানতে বাধ্য নই এবং উপজেলা যুবলীগ তাদের কার্যক্রম গঠনতন্ত্র মোতাবেক চালিয়ে যাবে বলে সংবাদ সম্মেলনে উলে­খ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি এসএম রেজাউল হক, যুবলীগনেতা বাবু গাইন, গৌরাঙ্গ মন্ডল, পরেশ মন্ডল ও হাফিজুর রহমান সহ নেতৃবৃন্দ। এদিকে বাবু গাইন ও তার লোকজন সংবাদ সম্মেলনে আসার পথে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে বলে জানিয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সমন্বয়ক শেখ আনিছুর রহমান মুক্ত। মুক্ত বলেন, আমি তখন দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে ছিলাম, এসময় কার্যালয়ের সামনে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী দাড়িয়ে ছিল। বাবু গাইন ও তার লোকজন মটর সাইকেল যোগে পৌর বাজারের দিকে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাক্কা দেয়। এর প্রতিবাদ করতে গেলে তারা তাদের উপর হামলা করে। এতে গদাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আরিফ হোসেন (২৫) ও সোলাদানা ছাত্রলীগের রসুল আহম্মেদ সুমন (২২) গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পরে আমি উপজেলা আওয়ামীলীগনেতা আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গী সহ যুবলীগ নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে তাদেরকে দেখতে যায়। এদিকে বাবু গাইন ও তার লোকজনের উপর উল্টো হামলা করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেন যুবলীগনেতা এসএম শামছুর রহমান। হামলার এ ঘটনার প্রসঙ্গে থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব জানান, দু’পক্ষই দাবী করেছে তাদের উপর হামলা করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোন পক্ষই থানায় এখনো পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। দুপুরের দিকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আমি সহ থানা পুলিশ কঠোর অবস্থান নেই। ফলে কোন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু বলেছেন, উপজেলা যুবলীগের যারা গঠনতন্ত্রের কথা বলছেন গঠনতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী তাদের কমিটি থাকার কথা না। তারপরও জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনা না থাকায় তাদের কমিটি যেমন সঠিক ছিল তেমনি জেলা কমিটির আমরা সভাপতি-সম্পাদক সঠিক রয়েছি। কেন্দ্র কমিটি নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের জেলা কমিটির সকল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমরা দায়িত্বে রয়েছি। জেলা সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, উপজেলা কমিটির একাংশের নেতৃবৃন্দ কোরাম পূরণ না করে অর্থের বিনিময়ে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা ও দুটি ইউনিয়ন কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করে। যার ফলে উপজেলা কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এ ব্যাপারে যারা জেলা কমিটির নির্দেশনা উপেক্ষা করে কার্যক্রম পরিচালনা করবে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান জামাল বলেন, জেলা যুবলীগের সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত আমরা সভাপতি-সম্পাদক হিসাবে বহাল রয়েছি এবং কেন্দ্র থেকে সেই নির্দেশনাই দেওয়া রয়েছে। উপজেলা যুবলীগ প্রথম শ্রেণির পৌরসভার কমিটি ভাঙ্গার ক্ষমতা রাখে না। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ সব কারণে জেলা যুবলীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় পাইকগাছা উপজেলা যুবলীগের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এতে কেউ যদি জেলা যুবলীগের সভাপতি সম্পাদক সহ জেলা কমিটিকে জড়িয়ে কোন বিভ্রান্তি ছড়াই কিংবা সংগঠন ও গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রম করেন তাহলে জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জেলা যুবলীগ সভাপতি জানিয়েছেন। এসব ঘটনায় একদিকে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে যুবলীগ নেতৃবৃন্দ। অপরদিকে দু’পক্ষের মধ্যে চলছে টান টান উত্তেজনা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সজাগ রয়েছে থানা পুলিশ। তবে হামলা ও মারপিটের ঘটনা শেষমেষ মামলা পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই

Maliketh থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.