Header Ads

বিশ্ব‌জিৎ হত্যা রহস্য উৎঘাটনে তৎপর থানা পুলিশ; লুঙ্গি ও মাছ ধরা জালতি উদ্ধার

পাইকগাছা প্রতিনিধি : পাইকগাছার আমুরকাটা গ্রামের বিশ্ব‌জিৎ হত্যার রহস্য উৎঘাটনে তৎপর রয়েছে থানা পুলিশ। কোন নিরিহ মানুষ যাতে হয়রানি না হয় এ বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সহ থানা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা। এদিকে রোববার চিংড়ি ঘের থেকে নিহত বিশ^জিৎ এর পরণের লুঙ্গি ও মাছ ধরা জালতি উদ্ধার করেছেন থানা পুলিশ। খুব অচিরেই হত্যা রহস্য উৎঘাটন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন ওসি রফিকুল ইসলাম। 

উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট বুধবার উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের আমুরকাটা এলাকার সন্তোষ সরদারের ছেলে পঙ্কজ সরদারের চিংড়ি ঘের থেকে একই এলাকার মৃত মনোরঞ্জন সানার ছেলে বিশ^জিৎ সানা (৪০) এর মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় এদিন নিহতের বড় ভাই জয়দেব সানা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে থানায় হত্যা মামলা করে। পুলিশ এ মামলায় সন্দেহ জনক যেখানে লাশ পাওয়া যায় তার পাশের ঘেরের দুই সহোদর ও ঘেরের বাবুর্চীকে সন্ধিগ্ধ আসামী হিসেবে আটক দেখিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে। নিহত বিশ^জিৎ নিখোঁজ হয় ৬ আগস্ট রোববার রাতে। এ মামলায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করলেও হত্যার রহস্য কিংবা কে বা কারা এবং কেন হত্যা করেছে তার সঠিক তথ্য এখনো উৎঘাটন করতে সক্ষম হয়নি। সোমবার দুপুরে সরেজমিন গেলে নিহতের পরিবার এবং এলাকাবাসী সঠিক কোন কারণ জানাতে পারেনি। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকার ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিশ^জিৎ রা ৩ ভাই। সে সকলের ছোট। পেশায় একজন ছোট-খাট ঘের ব্যবসায়ী। বিগত ১ বছর আগে তার বাবা মারা যায়। বড় ভাই অনেক বছর আগে থেকেই পৃথক রয়েছে। মেঝ ভাই মিলন সানা এবং বিশ^জিৎ এক সঙ্গেই বসবাস করতো। মেঝ ভাইয়ের বসতবাড়ীর পশ্চিম পাশে একটি গোলপাতার ঘরে বিশ^জিৎ থাকতো। ৪০ বছর বয়সে বিশ^জিৎ এখনো অবিবাহিত রয়েছে। সে দীর্ঘদিন থাইরড সমস্যা জনিত রোগে ভুগতেছে। তাদের পুরাতন বাড়ী একই ইউনিয়নের দীঘায়। সেখানকার বসতবাড়ীর পাশে ৪ বিঘা আয়তনের একটি চিংড়ি ঘের রয়েছে। যেটি বিশ^জিৎ পরিচালনা করতো। এর আগে বিশ^জিৎ প্রায় ৭/৮ বছর ভারতে কাজ করতো। ৫/৬ বছর যাবৎ সে এলাকায় রয়েছে। ঘটনার দিন রাতে তার মা লিলা রানী পাইকগাছা উপজেলা সদরে ছিল। এদিন রাত ১১টা পর্যন্ত তাকে বাড়িতে দেখা যায়। মেঝ ভাই মিলন সানা জানান, রাত ৮টার দিকে ২ ভাই এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করি। এরপর আমি ঘুমিয়ে যায়। বড়ভাই ও মামলার বাদী জয়দেব সানা জানান, রোববার রাতভর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। আমি এবং আমার স্ত্রী রাত ১১টার দিকে ডিপো থেকে বাসায় ফিরি। এ সময় বাড়ির সামনে বিশ^জিৎকে ঘোরাফেরা করতে দেখি। ছোট বৌদি জুথিকা সানা জানান, সকালে বাথরুমে যাওয়ার সময় খাটের উপর বিশ^জিৎ এর পরণের লুঙ্গি, মোবাইল এবং নীচে জুতা দেখি। কিন্তু তাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজা খুঁজি শুরু করি। এরপর সবাই মিলে খোঁজা খুঁজি করা হয়। তাকে কোথাও না পেয়ে মঙ্গলবার থানায় লিখিত অভিযোগ করে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। এরপর ৯ আগস্ট বসতবাড়ীর পূর্ব দিকে ১ কিলোমিটর দূরত্বে জনৈক পঙ্কজের দেড় বিঘা চিংড়ি ঘেরে বিশ^জিৎ এর মৃতদেহ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। যেখানে মৃতদেহ পাওয়া যায় তার দক্ষিণে রয়েছে সঞ্জয়ের ১৫ বিঘার চিংড়ি ঘের। উত্তরে সুশান্তের ৬ বিঘা, পশ্চিমে কার্তিকের ১ বিঘা এবং পূর্বে মরহুম আব্দুর রহমান মিস্ত্রীর পৌনে ৬শ বিঘা চিংড়ি ঘের রয়েছে। বিশ^জিৎ নিখোঁজের ৮ দিন অতিবাহিত হলেও কি কারণে তার মৃত হলো অথবা কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে তার প্রকৃত রহস্য এখনো উৎঘাটন সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে ঘের মালিক পঙ্কজ সরদার জানান,  আমার চিংড়ি ঘেরে মৃতদেহটি পাওয়া গিয়েছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই আমাকে এ মামলায় স্বাক্ষী করা হয়েছে। তবে আমি চাই প্রকৃত অপরাধি শাস্তি পাক। কোন নিরিহ মানুষ হয়রানি না হোক। একই এলাকার ৬৫ বছরের পঞ্চানন মন্ডল জানান, মরহুম আব্দুর রহমান মিস্ত্রী আমাদের এলাকায় ৪০ বছর চিংড়ি ঘের করে আসছে। মৃত্যুর পর তার ছেলেরা ঘেরটি পরিচালনা করছে। তাদের মধ্যে আমরা কখনো খারাপ কিছু দেখি নাই। সংবাদ কর্মী বি সরকার জানান, আব্দুর রহমান মিস্ত্রী অনেক ভালো মানুষ ছিলেন, তার ছেলেরাও বাবার মতো সামাজিক রয়েছে। নিহতের বড় ভাই ও মামলার বাদী জয়দেব সানা জানান, এ ঘটনায় আইনী সহায়তা পেতে থানায় মামলা করেছি। আমি চাই প্রকৃত অপরাধিকে আইনের আওতায় আনা হোক। কোন নিরিহ মানুষ হয়রানি হোক এটি আমাদের কাম্য নয়। থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম জানান, যেখানে মৃতদেহ পাওয়া যায় সেই জায়গা থেকে ১৩ আগস্ট রোববার নিহত বিশ^জিৎ এর পরণের লুঙ্গি ও মাছ ধরা জালতি এবং সাড়ে ৩ কেজি মতো পঁচা (নষ্ট) চিংড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকার নিরিহ কোন মানুষ হয়রানি হবে না এবং অচিরেই বিশ^জিৎ হত্যার প্রকৃত রহস্য উৎঘাটন করা সম্ভব হবে বলে থানা পুলিশের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন

কোন মন্তব্য নেই

Maliketh থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.