Header Ads

পাইকগাছায় সরকারি কর্মকর্তা, ডাঃ, প্রফেসর, মেডিকেল ছাত্রসহ স্বনামধন্য ব্যক্তিদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রাণী করার অভিযোগ প্রতিপক্ষ এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে

পাইকগাছা প্রতিনিধিঃ
পাইকগাছায় ইউনুছ মোল্যা নামে এক ব্যক্তি মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দিয়ে এলাকার বিভিন্ন পরিবার ও স্বনামধন্য ব্যক্তিদের হয়রাণী করে আসছে বলে অভিযোাগ উঠেছে। ইতোমধ্যে তিনি জায়গাজমি ও মৎস্য লিজ ঘেরের বিরোধকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর নামে একাধিক মামলা ও অভিযোগ করেছে। সর্বশেষ তিনি মনগড়া ও কাল্পনিক অভিযোগ এনে মেডিকেল অফিসার, সহকারি অধ্যাপক, বর্তমান ও সাবেক ইউপি সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা ও মেডিকেলের ছাত্রসহ ১৫ ব্যক্তিকে আসামী করে থানায় মামলা করেছে। তদন্তপূর্বক এ ধরনের হয়রাণীমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ ইউনুস মোল্যার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছে ভ‚ক্তভোগী পরিবার ও সচেতন এলাকাবাসী। 
প্রাপ্ত অভিযোগে-উপজেলার গজালিয়া মৌজায় মৃত তমেজ মোড়লের ছেলে সহকারি অধ্যাপক তরিকুল ইসলামসহ এলাকার ১৫ ব্যক্তির ৭ বিঘা ১৫ কাটা জায়গা রয়েছে। উক্ত জমিতে একই এলাকার মৃত জামশেদ মোল্যার ছেলে ইউনুছ মোল্যা (৫৫) মৎস্য লীজ ঘের করে আসছিলো। ২০১৯ সালে লীজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় জমির মালিকরা ৫ বছর মেয়াদে রেজিষ্ট্রি ডিডমুলে বিভিন্ন ব্যক্তিকে লীজ ডিড দেয়। ২০২০ সালের বছরের শুরুতেই ৪টি খন্ডে উক্ত জমি ভাগ করে বাঁধ দিয়ে মাছ ছেড়ে লীজ ডিড মালিকরা মৎস্য চাষ করে আসছে। ৪ বিঘা ১০ কাটা জমিতে ধুরু গাজী ও আশরাফুল ইসলাম, ২ বিঘা জমিতে হাফিজুল মোল্যা, ৩১ শতক জমিতে আকরাম মোল্যা ও ১১ শতক জমিতে ইদ্রিস মোল্যা মৎস্য চাষ করছে। জমি ও লীজ ডিড মালিকদের অভিযোগ মৎস্য লীজ ঘেরটি নিজের অনুকুলে না থাকায় ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে প্রতিপক্ষ ইউনুছ মোল্যা। লীজ ঘেরের দখল বুঝে নেয়ার পর থেকে তিনি বিভিন্ন ষড়যন্ত্র মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দিয়ে হয়রাণী করে আসছে। এ পর্যন্ত তিনি জমির মালিক ও এলাকার স্বনামধন্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা ও দু’টি অভিযোগ করেছেন। ইউনুছ মোল্যা ১৫/০২/২০২০ তারিখে ১০ ব্যক্তিকে আসামী করে বাসায় অগ্নিসংযোগ করার মামলা করে। যদিও অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগটি পুলিশের তদন্তে প্রমানিত হয়নি। এরপর থানা পুলিশ বরাবর দু’টি হয়রাণীমুলক অভিযোগ করে। সর্বশেষ তিনি ২৬/০৫/২০২০ তারিখে ১৫ ব্যক্তিকে আসামী করে মনগড়া অভিযোগ এনে থানায় অপর আরেকটি মামলা করে যার নং-২৫। মামলায় আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুর হাসপাতালে কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফারুখ, শহীদ ্আয়ুব ও মুসা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক তরিকুল ্ইসলাম, ল²ীখোলা কলেজিয়েট স্কুলের সহকারি অধ্যাপক মোজাহারুল গাজী, দাকোপ উপজেলা মৎস্য দপ্তরে কর্মরত জাহিদুল মোড়ল, সংশ্লিষ্ট ৭ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রাজু মোড়ল, প্রাক্তন ইউপি সদস্য আলহাজ্ব ওলিয়ার রহমান মোড়ল, মেডিকেলের ছাত্র রানা মোড়লসহ এলাকার স্বনামধন্য অনেক ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে। সর্বশেষ মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে বসতবাড়ীর ঘরের দেওয়ায় ভাংচুর, পুকুর হতে বিভিন্ন প্রজাতির দুই লক্ষাধিক টাকার মাছ ধরা, ১১টি গাছ কর্তন ও স্যালো মেশিন ভাংচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে। রোববার সকালে এলাকার গনমাধ্যমকর্মীরা সরেজমিন গেলে যার কোন প্রমাণ কিংবা নিদর্শন মেলেনি। ভ‚ক্তভোগী তরিকুল ইসলাম জানান- লীজ ঘেরটি ইউনুছ মোল্যার অনুকুলে না থাকায় তিনি একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রাণী করে আসছে। সর্বশেষ মামলায় যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার একটিও সঠিক নয়। মামলায় বসতঘরের দেয়াল ভাংচুরের কথা উল্লেখ থাকলেও লীজ ঘেরের আশপাশে কোন মানুষ বসবাস করে না কিংবা কোন বসত ঘরও নাই। সরেজমিন গেলেও লীজ ঘেরে পুরাতন একটি মাটির ঘরের অংশবিশেষ দেখা যায়। জমির মালিক হায়দার আলী বিশ্বাস জানান-১৯৮০ সালে আমি সাড়ে বিঘা সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত পাই যার মধ্যে উক্ত লীজ ঘেরে আমার ১০ শতক জমি রয়েছে। আমার জমির উপর পূর্বের লীজ ঘেরের বাসা ও আমাদের লাগানো কয়েকটা গাছ রয়েছে। বর্তমানে এখানে ইউনুছ মোল্যার কোন পুকুর, জলাশয় কিংবা ঘের নাই। অর্থাৎ তার পুকুর থেকে মাছ ধরার কোন প্রশ্নই আসে না। সরকারি কর্মকর্তা জাহিদুর মোড়ল জানান-লীজ ঘেরের মধ্যে আমার ফাতেমার নামে ১২ শতক জমি রয়েছে স্যালো মেশিন ভাংচুরের যে অভিযোগ করা হয়েছে তা আদৌ সঠিক নয়। ইউনুছ মোল্যা যখন ঘের করতো, ঘেরের একটা অংশে তার একটি স্যালো মেশিন বসানো ছিলো, যেটি ঘেরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি আর উঠিয়ে নিয়ে যাননি। যেভাবে রেখে গিয়েছিলেন এখনো পরিত্যক্ত অবস্থায় সেখানে সেভাবেই পড়ে রয়েছে। আর আমি ব্যক্তিগত পার্শ্ববর্তী উপজেলা সরকারি চাকুরী করি। অর্থাৎ হয়রাণীর উদ্দেশ্যেই আমার মত অনেক চাকুরীজীবিকে এ মামলায় আসামী করা হয়েছে। পাশের ঘের মালিক হাফিজুল মোল্যা জানান- আমি উক্ত লীজ ঘেরের পাশে ২ বিঘা জমিতে মৎস্য চাষ করছি। মামলায় যে গাছ কাটার অভিযোগ আনা হয়েছে, আমার জানামতে এখানে একটি গাছও কাটা হয়নি। সরেজমিন গেলেও নালিশি সম্পত্তিতে ১০টি গাছ দেখা যায়। কোন গাছ কর্তন কিংবা এ ধরনের কোন নির্দশন পাওয়া যায়নি। এদিকে একের পর এক হয়রাণীমূলক মামলা করায় ইউনুস মোল্যার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। ভ‚ক্তভোগী এলাকাবাসী তদন্তপূর্বক হয়রাণীমূলক মামলাটি প্রত্যাহারসহ ইউনুছ মোল্যার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান। মামলার তদন্ত কর্মকর্ত এসআই নূরুল আলম জানান-মামলার তদন্তকাজ চলমান রয়েছে। তবে তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান। 

কোন মন্তব্য নেই

Maliketh থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.