Header Ads

পাইকগাছায় বিক্রি করা নবজাতককে ফিরে পেল অসহায় দম্পত্তি; মানবতায় ওসি আমিনুলের আবারও অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন

বিশেষ প্রতিবেদক।।
পাইকগাছা থানার ওসি’র সহায়তায় বিক্রি করা নবজাতককে ফিরে পেয়েছে তার পরিবার। বৃহস্পতিবার দুপুরে উভয়কে নিজ কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে নবজাতক কেনা বাবদ ৪ হাজার ২শ টাকা লক্ষণ দম্পত্তিকে ফেরৎ দিয়ে নবজাতককে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়ে আবারও মানবতার অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন ওসি আমিনুল ইসলাম। গত ১৩ ডিসেম্বর একাধিক কন্যা সন্তান ও অভাব অনটনের কারণে নবজাতককে বিক্রি করে দিয়ে ক্লিনিকের টাকা পরিশোধ করেন নবজাতকের পরিবার। উলে­খ্য, গত ১২ ডিসেম্বর পরপর দুটি কন্যা সন্তানের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন ফারিন হসপিটালে পাইকগাছা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দীলিপ সরকারের স্ত্রী সুভাষী সরকারের গর্ভে আবারও কন্যা সন্তান ভূমিষ্ট হয়। এরআগেও দুটি কন্যা সন্তান থাকায় এবং সংসারের অভাব অনটনের কথা চিন্তা করে ক্লিনিকের টাকা পরিশোধ করতে পরের দিন ১৩ ডিসেম্বর দীলিপ-সুভাষী দম্পত্তি নবজাতককে ৪ হাজার ২শ টাকার বিনিময়ে পৌরসভার বাতিখালী গ্রামের নিঃসন্তান দম্পত্তি লক্ষণ-কবিতার নিকট বিক্রি করে দেন। অবশেষে নবজাতককে তার পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগ নেন থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ডাকেন উভয়কে। এ সময় নবজাতক সন্তানকে দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মা সুভাষী সরকার। কয়েক দিনের লালন পালনের কষ্ট ভুলতে পারেন নি কবিতা রানীও। তিনিও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। সবাইকে শান্তনা দিয়ে ওসি আমিনুল ইসলাম নবজাতক বিক্রির ৪ হাজার ২শ টাকা ব্যক্তিগত ভাবে তিনি নিজেই ফেরত দেন লক্ষণ দম্পত্তিকে। এ সময় কবিতার কোল থেকে নবজাতককে নিয়ে তুলে দেন নবজাতকের মায়ের কোলে। এর আগেও ওসি আমিনুল পূর্ণিমা নামে অসহায় এক গৃহবধূকে বোনের মর্যাদা দিয়ে প্রভাবশালীদের দখলে থাকা তার সম্পত্তি উদ্ধার করে দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। সন্তানকে ফিরে পাওয়ারপরও সুভাষীর আনন্দ অশ্র“ যেন থামতে ছিল না। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, সন্তানকে ছেড়ে আমি একদিনও ঠিকমত খাইতে পারিনি, ঠিকমত ঘুমাইতে পারিনি, সব সময় শুধু কেঁদেছি। কাঁদতে কাঁদতে তিনি ওসি’র এমন মহৎ উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। নবজাতকের পরিবারের ন্যায় ওসি’র এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার সবশ্রেণির মানুষ। এ ব্যাপারে ওসি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব জানান, প্রত্যেকটি সন্তান তার পিতা-মাতার কাছে অনেক যতেœর এবং আদরের। সংখ্যা দিয়ে কেউ সন্তানকে মূল্যায়ন করে থাকে না। জানতে পারলাম সামান্য কিছু টাকার জন্য নবজাতককে বিক্রি করে দিয়ে ক্লিনিকের টাকা পরিশোধ করেছেন। পরে মানবিক দিক বিবেচনা করে নবজাতককে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগ নেই এবং এ কাজে দুই পরিবারওই এগিয়ে আসাই উদ্যোগটি সফল হয়েছে। জেলা প্রশাসক আমিন-উল-আহসান জানান, গরীব মানুষের জন্য সরকারী ভাবে চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার এবং সুযোগ রয়েছে। ক্লিনিকের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে সন্তান বিক্রির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।

কোন মন্তব্য নেই

Maliketh থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.