Header Ads

পাইকগাছায় করোনার ত্রানের চাল নিয়ে ওয়ার্ডে অসন্তোষ; প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিতরণ সম্পন্ন

পাইকগাছাা প্রতিনিধি : পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ত্রাণের চাল বিতরণে বিলম্ব হওয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার অনেকেই সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে শনিবার সকালে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে ইউএনও, ওসি ও ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত থেকেই বরাদ্ধকৃত চাল ওয়ার্ডের উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করলে বিব্রতকর পরিস্থিতির অবসান হয়।
    সুত্রমতে-করোনার কারনে এলাকার কর্মহীন ও দুঃস্থ মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা হিসেবে গত ২৪ মে কপিলমুনি ইউনিয়ন পরিষদের অনুকুলে ১৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ হয়। পরেরদিন ঈদ থাকায় সময় স্বল্পতার কারনে ইউপি চেয়ারম্যান বরাদ্ধকৃত চালের মধ্য থেকে ৭ মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করে ৫টি ওয়ার্ডের অনুকুলে হস্তান্তর করেন। যার মধ্যে ৯নং ওয়ার্ডের অনুকুলে ১১ শ কেজি চাল প্রাপ্ত হয়। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর কারনে সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারকে অবহিত করে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন বরাদ্ধকৃত চাল নিজের হেফাজতে এলাকার মসজিদে রেখে দেয়। এদিকে চাল প্রাপ্তির কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর বিতরণ না করে মসজিদে রেখে দেয়ায় এলাকার অনেকের মধ্যে সন্দেহ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ তুললে শনিবার সকালে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুলিয়া সুকায়না, ওসি এজাজ শফি, ওসি তদন্ত আশরাফুল আলম, ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়াদ্দার ও ট্যাগ অফিসার সহকারি প্রোগ্রামার মৃদুল কান্তি দাশসহ বিভিন্ন গনমাধ্যমকর্মী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় জিন্নাত আলী  ও কুদ্দুস জোয়াদ্দার নামে দ্ইু ব্যক্তি ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন ঈদের আগেরদিন ইউপি সদস্যের চাল গ্রহন করেছে। এর মধ্যে অন্যান্য ৪টি ওয়ার্ডে চাল বিতরণ করা হয়েছে। অথচ আমাদের ওয়ার্ডের চাল বিতরণ না করে অসৎ উদ্দেশ্যে তিনি মজুদ করে রেখেছেন। আমরা এর প্রতিবাদ করায় মেম্বার এখন বিতরণের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেকেই মেম্বারের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ করে যদিও চাল বিতরণ না হওয়া ও মসজিদে রাখার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারসহ অনেকেই অবহিত থাকায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ গ্রহনযোগ্য বলে মনে করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরে ত্রানের চাল সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণের নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এ প্রসংগে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন জানান আমি এর আগেও ৩ বার মসজিদের এখানেই চাল বিতরণ করেছি। ঈদ ও নিজের অসুস্থতাসহ নানা কারন্ েচাল বিতরণে একটু বিলম্ব হওয়ায় চালগুলো পূর্বের অর্থাৎ এলাকার মসজিদেই রেখে দিয়েছিলাম। যা এলাকার লোকজন সবাই দেখেছে এবং জানে। এলাকার আমার বিরোধী দু’একজন লোক অপপ্রচার করে আমার ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছে।  ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়াদ্দার জানান- ঈদের কারনে বিতরণ করা সম্ভব নয় এজন্য আমি বরাদ্ধের সব চাল উত্তোলন করিনি। এরমধ্যে ৪টি ওয়ার্ডে বিতরণ করা হয়েছে, এই ওয়ার্ডের চাল আগামীকাল বিতরণ করার কথা রয়েছে। এ বিষয়গুলো সবই ইউএনও স্যার ও ট্যাগ অফিসার অবহিত রয়েছে। তিনি বলেন আমার ইউনিয়নের ৪টি ওয়ার্ডে চাল বিতরণ করা হলেও এখনো অন্য কোন ইউনিয়ন একই বরাদ্ধের চাল উত্তোলন করতে পারেনি। ট্যাগ অফিসার মৃদুল কান্তি দাশ জানান-ঈদ ও মেম্বারের অসুস্থতার কারনে চাল বিতরণে একটু বিলম্ব হয়। ফলে ওয়ার্ডের প্রাপ্ত চাল শুক্রবার সকালে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য এলাকার যেখানে বিতরণ করা হয়, সেখানকার মসজিদে রেখে দেয়। আগামীকাল চাল বিতরণ করা হবে মর্মে সিদ্ধান্ত হয় এবং সিদ্ধান্তের বিষয়টি ইউএনও স্যার ও চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়। যদিও শনিবার আমি উপস্থিত থেকেই সমস্ত চাল উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করেছি,এ নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু নাই। ওসি এজাজ শফি জানান-চাল আত্মসাথ করেছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার কোন ভিত্তি পাওয়া যায়নি। মেম্বারের যদি আত্মসাৎ করার ইচ্ছা থাকতো বা অসৎ কোন উদ্দেশ্যে থাকতো তাহলে চালগুলো সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মসজিদে না রেখে গোপন কোন স্থানে রেখে দিতো। এছাড়া চাল বিতরণের না হওয়া বিষয়টি ইউএনও মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার অবহিত আছেন বলে জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুলিয়া সুকায়না জানান-ঈদের আগেরদিন কপিলমুনি ইউনিয়নের অনুকুলে ১৪ মেঃ টন করোনার ত্রাণের চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারনে সব চাল বিতরণ সম্ভব নয় এজন্য চেয়ারম্যান আমাকে জানিয়ে ৭ মেঃ টন চাল উত্তোলন করে। চাল নিয়ে দু’একজন ব্যক্তি যারা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তারা এটা সঠিক করেননি। প্রতিটি ইউনিয়নের চাল বিতরণের স্বচ্ছতা নিশ্চিতকল্পে এক বা একাধিক ট্যাগ অফিসার নিয়োাগ করা হয়েছে। তাদের উপস্থিতিতেই চাল উত্তোলন, ওয়ার্ড ভিত্তিক বিতরণ এমনকি মাস্টাররোলও সম্পন্ন করা হয়। কপিলমুনি ইউনিয়নে ৯নং ওয়ার্ডের চালও আগামীকাল ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে বিতরণ করার কথা ছিলো। যেহেতু চাল নিয়ে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেহেতু ঘটনাস্থলে আমি উপস্থিত থেকেই ত্রাণের সমুদয় চাল উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

কোন মন্তব্য নেই

Maliketh থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.