Header Ads

পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যানের মৃত্যুতে এডিসি জুলিয়া সুকায়নার মর্মস্পর্শী স্ট্যাটাস

কেউ আর কখনো মামনি বলে ডাকবে না....
পাইকগাছা প্রতিনিধি  :
পাইকগাছার সদ্য বিদায়ী ইউএনও জুলিয়া সুকায়না এক মর্মস্পর্শী স্ট্যাটাস এর মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেছেন সদ্য প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলীকে। ইউএনও জুলিয়া সুকায়না তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে প্রয়াত চেয়ারম্যানকে স্মৃতিচারণ করে কর্মকালীন সময়ের বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, গাজী মোহাম্মদ আলী ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ারপর ইউএনও জুলিয়া সুকায়নার সাথে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম শুরু করেন। শুরু থেকেই মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিটি কাজে তিনি সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। দু’জন এক হয়েই মোকাবেলা করেছেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বুলবুল ও আম্পান সহ মহামারী করোনা। ইউএনও জুলিয়া সুকায়না উপজেলা পরিষদে দৃষ্টিনন্দন যত উন্নয়ন করেছেন প্রতিটি কাজেই রয়েছে প্রয়াত চেয়ারম্যানের সহযোগিতা। উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র মধ্যে এত চমৎকার সমন্বয় ছিল যা সচারচর উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র মধ্যে দেখা যায় না। উপজেলা চেয়ারম্যান বয়সে প্রবীণ হওয়ায় ইউএনও জুলিয়া সুকায়নাকে তিনি নিজের মেয়ের মত ¯েœহ করতেন। তাদের সম্পর্কটা অনেকটাই বাবা-মেয়ের সম্পর্কে পরিণত হয়। ইউএনও জুলিয়া সুকায়না উপজেলা চেয়ারম্যানকে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের একজন সৈনিক ছিলেন। তিনি বয়সে প্রবীণ হলেও চিন্তা ভাবনা, কথাবার্তা, কাজে কর্মে ছিলেন, চিরতরুণ। মানসিকতায় ছিলেন অত্যান্ত আধুনিক ও উদার। ভীষণ হাসিখুশি ও প্রাণপ্রাচুর্যে আমুদে মানুষ ছিলেন তিনি। আত্মসম্মানবোধ ছিল প্রবল। তার মধ্যে কৃতজ্ঞতাবোধ ছিল অসাধারণ। তিনি ভাল তথ্যবহুল বক্তব্য দিতেন। তিনি উপজেলার সকল কর্মকর্তাদের অভিভাবক ছিলেন। দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে দাপ্তরিক সম্পর্ককে ছাপিয়ে আমাদের সম্পর্ক বাবা-মেয়ের সম্পর্কে পরিণত হয়। যা পরবর্তীতে অনেকটাই পারিবারিক সম্পর্ক হয়ে যায়। তিনি আমাকে মা-মনি, আমার মেয়েদেরকে নাতনী ও আমার হাসবেন্ডকে জামাই বলে সম্বোধন করতেন। প্রতিদিন সকলে উনার ফোন পেতাম। খুলনার মিটিংএ কখন গেলাম এবং সময় মতন ফিরলাম কিনা সার্বক্ষনিক খোঁজ নিতেন। অসুস্থ্য হলে সার্বক্ষনিক খোঁজ নিতেন। জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী সবকিছুই নিজের মেয়ের মত করে উদযাপন করেছেন। আমার এডিসি’র অর্ডার হলে ইউএনও হিসেবে ধরে রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ উনাকে ভীষণ পছন্দ করতেন। সবাই তাকে মুরব্বি বলে সম্বোধন করতেন। ১৪ জুলাই নবাগত ইউএনও এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকীর নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করে এডিসি হিসেবে মাগুরার উদ্দেশ্যে চলে আসি। এর দুই দিন পর ১৭ জুলাই জানতে পারলাম তিনি আর আমাদের মাঝে নাই। তার এমন আকস্মিক মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না, মেনে নেওয়া যায় না। খালাম্মাকে নিয়ে মাগুরায় বেড়াতে আসবেন বলে ছিলেন, আমি মাগুরায় আসার আগেই তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। কত স্মৃতি, কত কথা, কত পরিকল্পনা তার সাথে উনার মত এমন ¯েœহ, মায়া, মমতা ভালোবাসা শুভাকাঙ্খী, দরদী আপনজন আমার জন্য আর কোন কর্মস্থলে কেউ হবে না। কেউ আর বার বার ফোন করে মামনি বলবে না। কেউ আর কখনো মামনি বলে ডাকবে না। মহান আল্লাহর কাছে এইটুকু চাওয়া আল্লাহ উনাকে বেহেস্তবাসী করুন, পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দিন. আমিন।

কোন মন্তব্য নেই

Maliketh থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.